বাংলাদেশের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। উজানে অতি ভারি বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে আকস্মিক বন্যার কবলে পড়ে দেশের অন্তত ১০ জেলা প্লাবিত হয়েছে। ফেনী জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে মুহুরী নদীর বানে প্রায় ৯৫% এলাকা ডুবে গেছে। এতে ৫ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ৩৬ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার দ্রুত তৎপরতা দেখালেও, ফেনীর পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ, মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন এবং সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। উদ্ধার কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় অনেক মানুষ বিপর্যস্ত।
ভারতকে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, তবে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ার বিষয়টি ‘তথ্যগতভাবে সঠিক নয়’। বিশেষজ্ঞদের মতে, উজানে অতি ভারি বর্ষণই মূল কারণ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতির জন্য অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টির প্রভাবকেই দায়ী করছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে উদ্ধার কাজের জন্য সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে নিয়োজিত করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং সেখানে পানীয় জল ও রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা এবং ভবিষ্যতে বন্যা এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপের ওপর আলোচনা চলছে।