Headlines

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় রসুলুল্লাহর (সা.) দোয়া ও পরামর্শ

 

দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত এবং ইবাদতের মূল অংশ। দোয়া ছাড়া ইবাদত অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যে কোনো সময় যে কোনো দোয়া পড়া যায়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রসুল (সা.) আমাদের দোয়া শিখিয়েছেন, এমনকি ছোট থেকে ছোট বিষয়েরও দোয়া তিনি শিখিয়েছেন।

 

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন, যেন তার উম্মতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দিয়ে একসাথে ধ্বংস করা না হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় রসুলুল্লাহ (সা.) বেশি বেশি তওবা-ইসতেগফার করতেন এবং অন্যদেরও তা পড়ার নির্দেশ দিতেন।

 

বন্যা ও অন্যান্য দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে আমাদের মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। পাশাপাশি দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও আশ্রয়ের ব্যবস্থাও করতে হবে। বৃষ্টি আমাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে, তবে কখনও কখনও তা বিপদও ডেকে আনে। অতিবৃষ্টি ও বন্যা আমাদের জন্য কষ্টদায়ক হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগের সময় মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ দোয়া পড়তে বলেছেন।

 

প্রবল বৃষ্টি বন্ধের জন্য দোয়া:

اللّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا، اللّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالظِّرَابِ وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَر

 

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা, আল্লাহুম্মা আ’লা আল-আকামি ওয়াজ-জিরাবি ওয়া বুতুনি আল-আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতি আশ-শাজার।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের চারপাশে বৃষ্টি বর্ষণ করুন, আমাদের ওপর নয়। হে আল্লাহ! পর্বতমালা, পাহাড়ের ঢাল, উপত্যকা এবং গাছপালার উপর বর্ষণ করুন।

 

এই দোয়া আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার জন্য, যাতে তিনি বৃষ্টি বন্ধ করে আশেপাশে বর্ষণ করেন এবং আমাদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেন।

 

প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিপর্যয় ও প্রতিকূল অবস্থায় রসুলুল্লাহ (সা.) খুবই বিচলিত হতেন এবং আল্লাহর শাস্তির ভয় করতেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা বাতাসকে গালি দিও না। তবে যদি তোমরা একে তোমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেখতে পাও, তবে এই দোয়া করবে:

 

‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা মিন খাইরি হাজিহির রিহি ওয়া খাইরি মা ফিহা ওয়া খাইরি মা উমিরাত বিহি, ওয়া নাউজুবিকা মিন শাররি হাজিহির রিহি ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উমিরাত বিহি।’

(তিরমিজি, মিশকাত)

 

অর্থ: হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট এই বাতাসের ভালো দিক, এতে যে কল্যাণ রয়েছে তা এবং যে উদ্দেশ্যে এটি এসেছে তার উত্তম দিকটি প্রার্থনা করছি। এবং আমরা তোমার কাছে এর খারাপ দিক থেকে, এতে যে অকল্যাণ রয়েছে তা থেকে এবং যে উদ্দেশ্যে এটি আদিষ্ট হয়েছে তার মন্দ দিক থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

 

হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়, কিন্তু আপনি তা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন কেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, “আমি শঙ্কিত হই এই ভেবে, বৃষ্টি আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে নেমে আসে কিনা। কেননা আগের উম্মতদের ওপর এভাবে (বৃষ্টি বর্ষণের আকারে) আজাব নেমে এসেছিল।” (তিরমিজি ৩৪৪৯, বুখারি ৩২০৬, মুসলিম ৮৯৯)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *