Headlines

ত্রাণ বিতরণে অব্যবস্থাপনা: নোয়াখালী ও ফেনীতে বঞ্চিত মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক এলাকাবাসী

ভাদ্র মাসের শুরুতেই আকস্মিক বন্যায় ডুবে গেছে নোয়াখালী ও ফেনীর ঘরবাড়ি; বেশিরভাগ পরিবারের চুলা জ্বলছে না। ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে কেউ কেনা খাবারের ওপর নির্ভর করছেন, কেউবা অপেক্ষা করছেন ত্রাণবাহী গাড়ির জন্য। তারা যা পাচ্ছেন, তাই দিয়েই কাটছে তাদের দিন।

নোয়াখালীর বানভাসিদের অভিযোগ, বিপুল পরিমাণ ত্রাণ আসলেও ‘অব্যবস্থাপনার’ কারণে সবাই তা পাচ্ছেন না। মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষদের অবস্থা আরও করুণ; তারা কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলতেও পারছেন না। প্রান্তিক এলাকাগুলোতে সহায়তা পৌঁছাচ্ছে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

বেগমগঞ্জের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, সহায়তা যা পাচ্ছেন, তা দিয়েই দিন পার করছেন। ১০ দিন ধরে চুলা জ্বলেনি, তাই ত্রাণের ওপরই তার ভরসা। বাস্তব পরিস্থিতিতে সবারই সহায়তার প্রয়োজন থাকলেও, মধ্যবিত্তরা ‘শরমে’ ত্রাণের লাইনে দাঁড়াতে পারছেন না বলে মনে করেন তিনি।

একই অবস্থা ফেনীতেও। সেখানকার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ত্রাণ বণ্টনের অব্যবস্থাপনার কারণে কিছু মানুষ বারবার পাচ্ছেন, আবার কেউ একবারও পাননি। ফেনীর মুন্সিরহাটের কমুয়া এলাকার বাসিন্দা জসীম উদ্দিন বলেন, “অনেকে বারবার ত্রাণ নিচ্ছে, কেউ একবারও পাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে সমানভাবে সহায়তা দেওয়া উচিত।”

বন্যার ক্ষয়ক্ষতির কারণে অনেকেই ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বেগমগঞ্জের একলাশপুর এলাকার ব্যবসায়ী বাবলু মিয়া বলেন, “সারাজীবন মানুষকে সাহায্য করেছি, এখন নিজে বিপদে থাকলেও ত্রাণ নিতে লজ্জা পাচ্ছি।”

পরশুরাম উপজেলায় ত্রাণ পৌঁছালেও প্রান্তিক এলাকার মানুষ সহায়তা পাননি। সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ বেশি ত্রাণ পেলেও দূরের মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। স্থানীয় শাহজাহান বলেন, “ত্রাণ এদিক-ওদিক চলে যায়, আমরা কিছুই পাই না।”

ত্রাণ বণ্টনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশাসনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি কর্মকর্তারা মনে করেন, জেলা প্রশাসক উদ্যোগ নিলে ইউএনওদের মাধ্যমে ত্রাণ সঠিকভাবে বিতরণ করা সম্ভব হতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *