ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস সংস্কার না হওয়া নিয়ে সমালোচনা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেছেন, এখনো নব্বইয়ের দশকের কারিকুলামেই পড়ানো হয়।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
নিজ বিভাগের, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদাহরণ টেনে আব্দুল কাদের বলেন, “একটি বানান ভুল পেলে স্যার সেটি ঠিক করতে বলেন। আমাদের সিনিয়রদেরও একই কথা বলা হয়। প্রতিবছর একইভাবে এ কথাই বলা হয়। শিক্ষকরা স্লাইড দেখে পড়ান, যা আমাদের হতাশ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকাংশ মেধাবী শিক্ষার্থী প্রতিবছর গ্রাম থেকে স্বপ্ন নিয়ে আসে। কিন্তু একটি আসনের জন্য গণরুম ও গেস্টরুম সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। দিনে তিনটি প্রোগ্রাম করতে হয়, রাত ১২টা পর্যন্ত গেস্টরুম; এরপর ট্রাকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়। এভাবে একজন শিক্ষার্থীকে চাঁদাবাজ বা মাদকাসক্ত বানিয়ে ফেলা হয়। এসবই দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির ফল।”
আবাসিক সংকটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে সরকারই ক্ষমতায় আসে, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রাখে। কারণ, সংকট না থাকলে শিক্ষার্থীরা দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হবে না। কর্মচারীদের জন্য বড় আবাসন হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য কিছুই করা হয় না, এটি পরিকল্পিতভাবেই করা হচ্ছে।”
আব্দুল কাদের বলেন, “বিজয় একাত্তর হলে থাকার ইচ্ছা থাকলেও আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করার কারণে ছাত্রলীগ আমাকে হল থেকে বের করে দেয়। আমার বাবা একজন সিকিউরিটি গার্ড, যিনি মাত্র ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই যে বাইরে থাকার মতো সামর্থ্য আমার নেই এবং মেরুদণ্ড বিক্রি করতে পারব না। তাই আমি আর হলে উঠিনি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের নেতৃত্বাধীন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসমাজ’ আয়োজিত এ আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।