ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ইকামাতে দ্বীন মডেল কামিল (এম.এ) মাদরাসার অধ্যক্ষসহ ২৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন স্থগিত করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাতিজা ও ফরিদপুর-৪ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি আমলে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এবং তার নির্দেশনা না মানার কারণেই তিনি এই পদক্ষেপ নেন।
২০২১ সালের ৮ অক্টোবর নিক্সন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে একটি ডিও লেটার পাঠিয়ে ওই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরপর ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বেতন-ভাতা স্থগিত করে দেয়।
এ বিষয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ মৃধা জানান, নিক্সন চৌধুরী তার অনৈতিক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের নির্দেশ অমান্য করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধের সুপারিশ করেন এবং সরকার তা মেনে নেয়। তার এই অবৈধ পদক্ষেপের ফলে গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মাদরাসার ২৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী। তাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করলে, তাদের ‘জামাতি-জঙ্গী’ ট্যাগ দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়।
তবে, হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই নির্যাতিত শিক্ষকরা মুখ খুলেছেন। গত ১ সেপ্টেম্বর তারা অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে পুনরায় বেতন-ভাতা চালুর আবেদন করেছেন। অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ মৃধা নিক্সনের পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দিন জানান, মাদরাসাটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিধি মেনেই পরিচালিত হয়ে আসছে এবং এখানে ২৮ জন শিক্ষকের বেতন স্থগিত রয়েছে। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে তদন্তাধীন, এবং তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে।
মাদরাসার সভাপতি মো. আসাদউজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই নিক্সন চৌধুরী ডিও লেটার দিয়ে তাদের বেতন স্থগিত করেছেন। প্রতিষ্ঠানটি একাধিকবার জেলার শ্রেষ্ঠ মাদরাসা এবং আবু ইউসুফ মৃধা কয়েকবার শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন।