Headlines

“বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এক মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের বড় পরিবর্তন: প্রশাসনিক রদবদল, আইনি সংস্কার ও দুর্নীতি দমন”

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস: অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবর্তন ও উদ্যোগ

গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাপে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। এই সরকারের প্রথম মাসে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ও সংস্কার সাধিত হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন

হাসিনা সরকারের পতনের পর নিরাপত্তার অভাবে কর্মবিরতিতে থাকা পুলিশের ১১ আগস্ট কাজে ফেরা শুরু করে, যখন অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পরিচালিত বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়, যা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে।

প্রশাসনে রদবদল

সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রশাসনের বিভিন্ন পদে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কয়েকশ’ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বদলি, পদায়ন এবং নিয়োগ করা হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া অনেক কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছে, তাদের জায়গায় নতুন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বিচার বিভাগে পরিবর্তন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাপের মুখে, প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিরা পদত্যাগ করেন। এরপর, নতুন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়, এবং ২২৭ জন নতুন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ দেওয়া হয়।

দুর্নীতি দমন

অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতি রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে বহু প্রাক্তন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং আমলাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যাংক জালিয়াতির তদন্তও চলমান। দুর্নীতিগ্রস্তদের বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষাখাতে পরিবর্তন

সরকারের নীতিমালা পরিবর্তনের ফলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল এবং নতুন শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা পুনরায় চালু করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা এবং জাতীয় দিবস বাতিল

১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসের ছুটি বাতিল করা হয়েছে এবং নতুন রাজনৈতিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ

অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন খাতে পরিবর্তন এনেছে, তবে এখনও দেশের বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভ এবং প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। নতুন সরকার দেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *