ইসলামে মানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং কল্যাণকর বিষয় নির্বাচন করার ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা রয়েছে, যাতে মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও সহজতা লাভ করতে পারে। এ লক্ষ্যে রাসুল (সা.) ইস্তেখারার নামাজের শিক্ষা দিয়েছেন।
ইস্তেখারা হলো, কোনো বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। হাদিসবিশারদ ইবনে হাজার (রহ.) ব্যাখ্যা করেছেন যে, ইস্তেখারা মানে হলো কোনো বিষয় বাছাই করার ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া, যেন ব্যক্তি উত্তম বিষয়টি বেছে নিতে পারে। ইস্তেখারার নামাজের দোয়া জাবের বিন আব্দুল্লাহ্ (রা.) বর্ণনা করেছেন, যেখানে রাসুল (সা.) সাহাবিদের সব বিষয়ে ইস্তেখারা করার শিক্ষা দিতেন, যেভাবে কোরআনের সুরা শিক্ষা দিতেন।
ইস্তেখারার দোয়া হলো:
“اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ…,” অর্থাৎ: “হে আল্লাহ! আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্যে কল্যাণ প্রার্থনা করছি, আপনার শক্তির সাহায্যে শক্তি প্রার্থনা করছি এবং আপনার অনুগ্রহ চাইছি। আপনি সবকিছু জানেন, আমি জানি না; আপনি ক্ষমতাবান, আমি নই।”
ইবনে আবু জামরা (রহ.) বলেন, ইস্তেখারার গণ্ডি শুধু ‘মুবাহ’ (যে কাজ করলে ক্ষতি নেই) বিষয়ের ক্ষেত্রে এবং এমন মুস্তাহাব (যে কাজের জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে) ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ, যেখানে দুটি মুস্তাহাবের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে এবং কোনটি আগে পালন করতে হবে তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। ইস্তেখারার উদ্দেশ্য হলো, দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ লাভ করা। এজন্য আল্লাহর দরজায় কড়া নাড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা নামাজের মাধ্যমে অর্জিত হয়।
সংক্ষেপে, যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য ও কল্যাণ কামনা করতে ইস্তেখারার নামাজ পড়া হয়। নিয়মটি হলো, দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে উল্লিখিত দোয়া পাঠ করে সাহায্য ও সহজতা প্রার্থনা করা।