শিশুরা আল্লাহপ্রদত্ত মহামূল্যবান উপহার, যাদের পবিত্র কোরআনে জীবনের ধন-সম্পদ বলা হয়েছে। যদি তাদের সঠিকভাবে সুশিক্ষা দিয়ে ছোটবেলা থেকেই গড়ে তোলা যায়, তবে মৃত্যুর পরও তাদের কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের সুফল পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মানুষ মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিন ধরনের আমল জারি থাকে—এক. সদকায়ে জারিয়া (চলমান পুণ্য), দুই. এমন জ্ঞান, যা মানুষের উপকারে আসে, তিন. সুসন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।’ (নাসায়ি, হাদিস ৩৬৫১)। অর্থাৎ নেক সন্তান মা-বাবার জন্য একটি শ্রেষ্ঠ অর্জন। কিন্তু সন্তানকে নেক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে মা-বাবাকে শুরু থেকেই কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।
গুনাহমুক্ত পরিবেশ
শিশুকে নেক সন্তান হিসেবে গড়ে তুলতে ছোটবেলা থেকেই তার প্রতি যত্নশীল হতে হবে এবং তার মানসিক বিকাশের দিকে নজর দিতে হবে। তার জন্য গুনাহমুক্ত একটি পবিত্র পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। শিশুর বেড়ে ওঠার সময় চারপাশের পরিবেশ তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে এবং এটি তার ব্যক্তিত্ব গঠনে প্রতিফলিত হয়। তাই শিশুদের সামনে কোনো ধরনের অসৌজন্যমূলক কথা ও কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
পরিচ্ছন্নতা শেখানো
ছোটবেলা থেকেই শিশুদের পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব বোঝাতে হবে। পরিচ্ছন্নতা শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। রাসুল (সা.) পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের অঙ্গ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। শিশুদের পরিপাটি রাখার চেষ্টা করতে হবে, কারণ এটি ব্যক্তিত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সৃজনশীল খেলনা
শিশুদের খেলনা হতে হবে সৃজনশীল ও শিক্ষামূলক, যা তাদের মানসিক বিকাশে সহায়ক হয়। বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ খেলনা নির্বাচন করতে হবে, যা শিশুর বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে। তবে ইসলামের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ খেলনা এড়িয়ে চলা উচিত।
ভিডিও গেম ও কার্টুন থেকে দূরে রাখা
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিডিও গেম ও কার্টুন শিশুদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি শিশুদের উত্তেজিত করে তোলে এবং বাবা-মায়ের অবাধ্য করে তোলে। তাই শিশুদের এসব থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা উচিত এবং বিকল্প বিনোদনের ব্যবস্থা করা উচিত।
ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া
সন্তানের জন্য ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কোরআন শিক্ষা, নামাজের প্রতি যত্নবান হতে শেখানো এবং গুনাহ থেকে সতর্ক করতে হবে।
নামাজে অভ্যস্ত করা
শৈশব থেকেই সন্তানকে নামাজের অভ্যাস করাতে হবে, যাতে সে ভবিষ্যতে নামাজের প্রতি যত্নবান হতে পারে।
বই পড়ায় উৎসাহী করা
বই পড়া শিশুদের মনের বিকাশে সহায়ক। তাদের ইসলামিক গল্প ও বইয়ের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে, যা তাদের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।