বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত, আহত, নিখোঁজ বা গুম হওয়া ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে একটি ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে, যার নাম ‘রেড জুলাই ডট লাইভ’ (redjuly.live)।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই পোর্টালের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাবির অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, অধ্যাপক মাফরুহি সাত্তার, অধ্যাপক আবু সাঈদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, এবং অধ্যাপক মোহাম্মাদ সালেহ।
পোর্টাল তৈরিতে কাজ করেছেন জাবির উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মিলহান, জাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ভেরিটেক কোম্পানির সিনিয়র টেকনিক্যাল লিড মাসুদ আলম, এবং জাবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক আবু সাঈদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পোর্টালে তথ্য সংগ্রহ করা হবে ক্রাউড সোর্সিংয়ের মাধ্যমে। বিভিন্ন স্তরে ভেরিফিকেশন এবং প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে সারা দেশ থেকে আসা তথ্য যাচাই করা হবে। পরবর্তীতে এসব তথ্য গবেষণা ও আহতদের সহায়তার কাজে ব্যবহার করা হবে।
মাহমুদুল হাসান মিলহান জানান, পোর্টালে শহীদ, আহত এবং নিখোঁজদের তথ্য, দলিল, ছবি, ও ভিডিওসহ বিস্তারিত উপাত্ত পাওয়া যাবে। বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের ছাত্র প্রতিনিধিরা এসব তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করবেন। এটি শুধুমাত্র আহত ও নিহতদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই করা হয়েছে; পোর্টালটি কোনো অর্থ সংগ্রহ করে না।
জাবির শিক্ষক আবু সাঈদ বলেন, পোর্টালটি তিনটি স্তরে তথ্য সংগ্রহের জন্য তৈরি করা হয়েছে। যে কোনো তথ্য ইনপুট করার পর সেটি যাচাই করার দুটি স্তর পার হয়ে ওয়েবসাইটে প্রকাশ পাবে।
‘রেড জুলাই’র সদস্য শেখ মোহাম্মাদ সবজু বলেন, এই ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে আহত ও নিহতদের যথাযথ তথ্য সংরক্ষণ করে নিশ্চিত করা হবে যে, ভবিষ্যতে তাদের ত্যাগের যথার্থ মূল্যায়ন হবে এবং সরকারের নিপীড়নের প্রমাণ হিসেবে থাকবে।
অন্যান্য বক্তারাও জানান, এই উদ্যোগের মাধ্যমে আহতদের সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে, যা ভবিষ্যতে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সুবিধা সঠিক ব্যক্তির কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করবে।
অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম এবং অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু জানান, এ ওয়েব পোর্টালটি আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের অবদানকে সংরক্ষণ করার একটি প্রয়াস এবং এর মাধ্যমে আন্দোলনের সঠিক তথ্যভিত্তিক ডকুমেন্টেশন করা সম্ভব হবে।