Headlines

রাজশাহীতে শিবির নেতা হত্যা মামলায় সাবেক মেয়রসহ ১২৫০ আসামি

 

রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘর্ষের ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা রায়হান আলী নিহত হয়েছেন। ৫ অগাস্ট সাগরপাড়া কল্পনা হল মোড়ে ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় রায়হান গুলিবিদ্ধ হন। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও ৮ অগাস্ট সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।

রায়হান আলী রাজশাহী কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করে রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

নিহতের ভাই রানা ইসলাম অভিযোগ করেন, সাবেক সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর গুলি চালান। মামলায় তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অপর ১,২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ৫ অগাস্ট আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সাহেববাজারের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হন। হামলায় অনেক ছাত্র আহত হলে রায়হান তাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে যান, কিন্তু তিনি নিজেই গুলিবিদ্ধ হন।

 

তখন যুবলীগ নেতা জহিরুল হক রুবেল তার হাতে থাকা রিভলভার দিয়ে রায়হানের মাথায় গুলি করে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

ওসি আরও জানান, সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ছাড়াও মামলায় আটজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাবেক প্যানেল মেয়র ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল মোমিন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও শাহমুখদুম থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল হক সুমন, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজামুল আযিম, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান হোসেন, ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদত হোসেন সাহু।

এছাড়া উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুজ্জামান শফিক, মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আক্তার নাহান, যুবলীগ নেতা জহিরুল হক রুবেল, মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাজীব, ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি বাপ্পী চৌধুরী রনি, রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকি কুমার ঘোষ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আল গালিব, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবিন সবুজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, বোয়ালিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান কালু।

মামলা দায়েরের সময় থানায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আবু মোহাম্মাদ সেলিমসহ দলটির নেতাকর্মীরা ।

মামলা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে মামলায় আসামি করা হয়েছে। কাউকে হয়রানিমূলক আসামি করা হয়নি। আশা করছি পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষে করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *