ফেনীর উত্তরাঞ্চলের তিন উপজেলা—ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এসব উপজেলার শতাধিক গ্রাম তলিয়ে গিয়ে লাখের বেশি মানুষ বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছেন। ডুবে গেছে সড়ক-মহাসড়ক ও ঘর-বাড়ি, বন্যার্তরা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে হাহাকার করছে।
মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট ও আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ ও পৌর এলাকার ৪৫টিরও বেশি গ্রাম পানির নিচে রয়েছে। ছাগলনাইয়ার পাঠান নগর, রাধানগর ও শুভপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামেও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।
এসব এলাকায় রাস্তাঘাট, পুকুর ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বন্যার পানি ঘরের ছাদ ও টিনের চাল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। স্থানীয় মানুষ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো ত্রাণ নিয়ে কাজ করছে।
গত মাসের শুরুতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর ১৫টি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়, যা মেরামতের পর চলতি মাসের শুরুতে বাঁধের আরও ১২টি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়। এই ভাঙনের ফলে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে অবকাঠামো, ধান, ফসল ও মৎস্যখাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে আবারও বন্যার কবলে পড়েছে এলাকাটি।
ফেনীর জেলা প্রশাসক মুসাম্মত শাহীনা আক্তার জানিয়েছেন, প্রশাসন ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার অভিযানে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফেনী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মুনীর হোসেন জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।