মহান আল্লাহ সব সময় বান্দার কল্যাণ চান। আল্লাহ যাদের কল্যাণ চান, তাদের সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো:
১. ইসলামের জন্য অন্তর উন্মুক্ত করা: আল্লাহ যাদের কল্যাণ চান, তাদের অন্তরকে ইসলাম গ্রহণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যার বক্ষকে আল্লাহ ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, সে তার রবের দেওয়া জ্যোতির মধ্যে থাকবে।’ (সুরা জুমার, আয়াত ২২)
২. বিপদাপদের সম্মুখীন করা: আল্লাহ বান্দাকে বিপদাপদের মাধ্যমে পরীক্ষা করেন, যা একটি বড় নিয়ামত। আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, ধন ও প্রাণের ক্ষতির মাধ্যমে এবং ফল-শস্যাদি বিনষ্টের মাধ্যমে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৫) বিপদকে সঠিকভাবে গ্রহণ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণের স্বাদ পাওয়া যায়।
৩. নেককারদের বিপদে ফেলা: আল্লাহ যখন কোনো নেককার ব্যক্তির কল্যাণ চান, তখন তাকে বিপদের সম্মুখীন করেন। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আমাদের ওপর দ্বিগুণ বিপদ আসে এবং দ্বিগুণ পুরস্কারও দেওয়া হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস ৪০২৪)
৪. তাকওয়ার গুণ দান করা: আল্লাহ তাকওয়া একটি মহৎ গুণ দান করেন তাদেরকে যাদের কল্যাণ চান। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দার কল্যাণ চান, তখন তার অন্তর ধনী করে দেন এবং তাকওয়া দান করেন।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস ৬২১৭)
৫. সত্যবাদী ও ন্যায়পরায়ণ সঙ্গী দান করা: আল্লাহ যখন কোনো নেতার কল্যাণ চান, তখন তাকে সত্বাদী ও ন্যায়পরায়ণ সঙ্গী দান করেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো নেতার কল্যাণ করেন, তখন তাকে সত্যবাদী উজির দান করেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস ২৯৩২)
৬. দ্বিনের জ্ঞান দান করা: আল্লাহ যাদের কল্যাণ চান, তাদেরকে দ্বিনের জ্ঞান দান করেন। মুআবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বিনের প্রজ্ঞা দান করেন।’ (বুখারি, হাদিস ৭১)
৭. দুনিয়ায় শাস্তি ভোগ করানো: আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের দুনিয়ায় কিছু শাস্তি দিয়ে থাকেন যাতে পরকালে তাদের শাস্তি কম হয়। আনাস (রা.) বলেন, ‘আল্লাহ যখন তার বান্দার মঙ্গল কামনা করেন, তখন তাকে দুনিয়ায় তাড়াতাড়ি বিপদাপদের সম্মুখীন করেন।’ (তিরমিজি, হাদিস ২৩৯৬)
৮. শরীর, সম্পদ ও সন্তানদের বিপদগ্রস্ত করা: আল্লাহ যে ব্যক্তির কল্যাণ চান, তার শরীর, সম্পদ বা সন্তানকে বিপদের সম্মুখীন করেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তার বান্দাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে চাইলে, তার শরীর, সম্পদ অথবা সন্তানকে বিপদগ্রস্ত করেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস ৩০৯০)
৯. নম্রতার গুণ দান করা: আল্লাহ নম্রতাকে ভালোবাসেন এবং যাদের কল্যাণ চান, তাদেরকে এই গুণ দান করেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো আহলে বাইতের কল্যাণ চান, তখন তাদের মধ্যে নম্রতার উদ্রেক ঘটান।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস ২৪৪৭১)
১০. মৃত্যুর আগে নেক আমলের সুযোগ দান করা: আল্লাহ যাদের কল্যাণ চান, তাদেরকে মৃত্যুর আগে সৎকাজ করার তাওফিক দেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ যখন তার বান্দার কল্যাণ চান, তখন তাকে আমল করতে দেন।’ (তিরমিজি, হাদিস ২১৪২)