বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি ১৯৭৭ সালের বিখ্যাত ‘ওয়াও’ সংকেতের একটি নতুন ব্যাখ্যা আবিষ্কারের দাবি করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে এই সংকেতকে এলিয়েনদের সম্ভাব্য বার্তা হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
এই সংকেত প্রথমবার ধরা পড়েছিল ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির ‘বিগ ইয়ার রেডিও’ টেলিস্কোপে, যা তখন থেকেই বিজ্ঞানীদের মধ্যে আলোচনা ও কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
যখন প্রথম বিজ্ঞানীরা এই সংকেত লক্ষ্য করেন, তারা এর পাশে ‘ওয়াও’ লিখে দিয়েছিলেন। ফলে সংকেটটি ‘ওয়াও’ নামেই পরিচিত হয়ে ওঠে। সংকেতটি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী এবং একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে সীমাবদ্ধ ছিল। এর উৎস নিয়ে নানা ধরণের অনুমান করা হয়েছিল, যেমন এলিয়েনদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাঠানো বার্তা।
‘স্যাজিটেরিয়াস’ নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে আসা এই সংকেতের উৎস সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা তখনও নিশ্চিত ছিলেন না। পরবর্তীতে আর কখনো এ ধরনের সংকেত ধরা পড়েনি। সেসময় বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করেছিলেন বুঝতে যে এটি কোনো মহাজাগতিক বুদ্ধিমত্তার সংকেত কিনা।
বর্তমানে, ‘ইউনিভার্সিটি অফ পুয়ের্তো রিকো’র গবেষকরা নতুন একটি ব্যাখ্যা নিয়ে এসেছেন। তাদের মতে, ‘ওয়াও’ সংকেতটি এলিয়েনদের কাছ থেকে আসেনি, বরং এটি একটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় ঘটনার ফলস্বরূপ ছিল।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ঠাণ্ডা হাইড্রোজেন মেঘের হঠাৎ উজ্জ্বল হয়ে ওঠার কারণে এমন সংকেত উৎপন্ন হতে পারে। সম্ভবত কোনো নিক্ষিপ্ত বস্তুর আঘাত বা একটি ‘ম্যাগনেটার ফ্লেয়ার’-এর কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে।
এই নতুন ব্যাখ্যার মাধ্যমে ‘ওয়াও’ সংকেতের রহস্য উন্মোচনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে এলিয়েনদের কাছ থেকে আসা সম্ভাব্য সংকেত শনাক্তে সাহায্য হতে পারে।
গবেষণাটি ২০২০ সালের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে করা হয়েছে এবং এর প্রাথমিক সংস্করণ অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে, বিজ্ঞান সম্প্রদায়ের মতামতের ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিমার্জনের প্রক্রিয়া চলছে এবং শিগগিরই এটি কোনো বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।