দেশের ১১টি জেলায় চলমান বন্যায় আরও ৫ জনের মৃত্যুর ফলে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ জনে। শুক্রবার পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৫৪। ফেনীতে সর্বাধিক ২৩ জন মারা গেছেন। শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ১টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন্যায় ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৪১ জন পুরুষ, ৬ জন নারী এবং ১২ জন শিশু। কুমিল্লায় ১৪ জন, ফেনীতে ২৩ জন, চট্টগ্রামে ৬ জন, খাগড়াছড়িতে ১ জন, নোয়াখালীতে ৯ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১ জন, কক্সবাজারে ৩ জন এবং মৌলভীবাজারে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজারে ১ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
বন্যাকবলিত ১১টি জেলার মধ্যে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার অন্তর্ভুক্ত। চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়েছে। মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে এবং কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার পরিস্থিতি উন্নতির পথে।
বন্যায় মোট ৬৮টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে এবং ৫০৪টি ইউনিয়ন বা পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯৯৫টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৫৭ হাজার ৭০২ জন।
পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ৩,৯২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০৫ জন মানুষ ও ৩৬ হাজার ১৩৯টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত ১১ জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ৫১৯টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মাধ্যমে সংগ্রহ করা এক লাখ ৪০ হাজার ৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, কাপড় ও পানি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। সার্বিকভাবে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে এবং দুর্গত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে।