সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে, অনেক সময় দেখা যায়, ছেলে সন্তান হলে আজান ও ইকামত দেওয়া হলেও, মেয়ে সন্তানের ক্ষেত্রে এই নিয়ম মেনে চলা হয় না। কেউ শুধু আজান দেন, কেউ ইকামত বাদ দেন, আর কেউ পুরো আমলটাই এড়িয়ে যান।
ইসলামি শরিয়তে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ অনুমোদিত নয়। ছেলে বা মেয়ে সন্তানের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা উচিত নয়।
কন্যা সন্তান জন্মালে আজান ও ইকামত না দেওয়ার মধ্য দিয়ে এক ধরনের অসন্তুষ্টি প্রকাশ পায়, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা প্রাচীন জাহেলি যুগের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়, যখন কন্যা সন্তানের পিতা হওয়া ছিল লজ্জার বিষয়।
কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, “যখন তাদের কেউ কন্যা সন্তানের সুসংবাদ পায়, তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায় এবং সে অসহ্য মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে থাকে। সে ভাবতে থাকে, অপমান সহ্য করে মেয়েকে রাখবে, না মাটির নিচে পুঁতে ফেলবে। তাদের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত নিকৃষ্ট।” (সূরা নাহল: ৫৮-৫৯)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “যখন জীবন্ত কন্যা সন্তানকে জিজ্ঞাসা করা হবে, কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হলো?” (সূরা তাকভির: ৮-৯)
এটি ছিল ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগের চিত্র। বর্তমান যুগ সভ্যতা, শিক্ষা, এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উন্নতির যুগ। তারপরও কন্যা সন্তানের জন্মে এমন আচরণ করা অত্যন্ত দুঃখজনক।
সন্তান দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতে। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।
যদি কেউ কন্যা সন্তান জন্মানোর কারণে নারীকে নির্যাতন করে বা কন্যা শিশুর সেবা-যত্নে অবহেলা করে, তাহলে সে অবশ্যই আল্লাহর সামনে অপরাধী হিসেবে দাঁড়াবে।