Headlines

ইলিশের আকাশচুম্বী দাম নিয়ে হতাশা, রপ্তানি বন্ধ হলেও স্বস্তি নেই স্বল্প আয়ের মানুষের

 

 

ইলিশ মাছের উচ্চমূল্য নিয়ে স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে চলছে তীব্র হতাশা। ইলিশের দাম কমানোর উদ্যোগের কথা জানালেও, তা আদৌ সাধারণ মানুষের নাগালে আসবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

মৌসুমের মধ্যে ইলিশের দাম কমার আশায় ছিলেন ক্রেতারা, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম পৌঁছেছে দেড় হাজার টাকায়। জেলেরা বলছেন, সাগরে ২৩ জুন পর্যন্ত ৬৫ দিনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ শিকার করলেও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ পাচ্ছেন না।

কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল আওয়াল জানান, ইলিশের দাম এখনও তেমন কমেনি, সরবরাহও যথেষ্ট বাড়েনি।

 

“ইলিশ মাছ দ্রুত পচনশীল। যদি প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ে এবং রপ্তানি না হয়, তবে দাম কমতে পারে। এক কেজি ওজনের ইলিশ হয়তো ১ হাজার টাকায় নামবে, তবে এর চেয়ে কম হবে না,” বললেন আওয়াল।

চাঁদপুরের জেলে সম্রাট বেপারি বলেন, “এই কয়েকদিন মাছ ধরতে গিয়ে কোনো লাভ হয়নি। ডিজেলের দাম এত বেশি যে মাছ না পেয়ে আমরা হতাশ হচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “জনসংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু নদীতে মাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য ও শ্রমিক খরচও বাড়ছে, যা আমাদের জন্য অতিরিক্ত চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

 

মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, দেশের মানুষের চাহিদা মেটানোর পরেই ইলিশ রপ্তানি করা হবে। তিনি জানান, দেশের মানুষ যাতে ইলিশ পায় এবং দাম কমে, সে জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে, ইলিশ রপ্তানি বন্ধের পরও দাম কমছে না। কিছু মানুষ ফেইসবুকে ইলিশের দাম কমার খবর দেখে বাজারে গেলেও বাস্তবে সেই দাম পায়নি।

 

কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা দুলাল চন্দ্র বলেন, “ইলিশের চাহিদা অন্যান্য মাছের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে ইলিশ বেশি ধরা পড়লেও তার দাম তেমন কমবে না।” দুলাল জানান, এক কেজি ইলিশ কিছুদিন আগেও ১৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আর এখন তা ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ইলিশের সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমতে পারে।

 

মারুফ নামের এক বিক্রেতা জানান, “ইলিশের চাহিদা সবসময়ই থাকে, তাই দাম খুব একটা কমবে না।” সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের বাজারে ইলিশের সর্বনিম্ন মূল্য ৮০০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৭০০ টাকা এবং এক বছর আগে ৬৫০ টাকা।

 

ভারতে ইলিশ রপ্তানির প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফিশ এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, “দুর্গাপূজার সময় ভারতে ইলিশ রপ্তানি করলেও বাংলাদেশের বাজারে তেমন প্রভাব পড়ে না। ইলিশ কম থাকলে দাম এমনিতেই বেশি থাকে।” তিনি আরও জানান, ইলিশের মৌসুম শুরু হওয়ায় কেজি প্রতি প্রায় ৩০০ টাকা দাম কমেছে, তবে রপ্তানি বন্ধের কারণে নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *